Monday, June 20, 2016

রিকশা যাত্রীদের কথা ভাবতে হবে

অনেকেই হয়তো জানা নেই, ঢাকার রিকশা গিনেস ওয়াল্ড বুকে স্থান পেয়েছে। ২০১৫ সালের ওয়ার্ল্ড গিনেজ রেকর্ডস বইটির ১৮৮ পৃষ্ঠার ‘আরবান ট্রান্সপোর্ট’ অংশে ‘মোস্ট সাইকেলস রিকশা ইন ওয়ান সিটি’ শিরোনামে এটি প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছবিগুলো একজন রিকশার প্রেমীর উদ্যোগ। ধন্যবাদ এ মানুষগুলোকে রিকশার জন্য এধরনের উদ্যোগ গ্রহনে। রিকশা একটি পরিবেশ বান্ধব বাহন। ঢাকার অধিকাংশ মানুষ রিকশা ব্যবহার করেন বা করতে হয়।


কিন্তু এ রিকশাকে ঢাকার যাতায়াত পরিকল্পনায় স্থান দেয়া হয় না। নিজস্ব সুবিধা চিন্তাকারী পরিকল্পনাবিদ, নীতিনির্ধারক, সিদ্ধান্তগ্রহণকারী এবং আইন প্রয়োগকারীরা প্রাইভেট গাড়ীর সুবিধা নিশ্চিত করতে গিয়ে রিকশার যাত্রীদের জন্য সারা শহরে এক নরক যন্ত্রণার সৃষ্টি করেছে। ছবি ইন্টারনেট রিকশা

২০০৪ সালে বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শ অনুসারে (যদিও বিশ্বব্যাংক অস্বীকার করে) ঢাকার রাস্তা হতে রিকশা বন্ধের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। তৎকালীন ডিটিসিবি, সিটি কপোরেশন এবং ট্রাফিক বিভাগ রিকশা বন্ধের লক্ষে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করে। রিকশা না চলা, রাস্তার নাম করা হয় ভিআইপি রোড।

বিশ্ব ব্যাংকের গবেষণার অনুসারে সুকৌশলে রাস্তার বিভিন্ন রাস্তায় রিকশার চলাচল বন্ধ করা হয়। মানুষকে প্রাইভেট গাড়ী ক্রয়ে উৎসাহী করতে সুকৌশলে এ নীতি গ্রহণ করা হয় (২০০৪ হতে ২০১৬ গাড়ী বৃদ্ধির চিত্র প্রমান)। ভিআইপি নামক রাস্তার বিভিন্ন সংযোগগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় ফলে রিকশাকে অনেক ঘুরে যেতে হয়।

কয়েকটি রাস্তায় নাম মাত্র লেন করা হয় টাকা খরচ করে, কিন্তু নানা সমস্যায় লেন কাজ হয়নি। সাইন্সল্যাব নিউমাকেটের রিকশার লেনটি আজ ১২ বছরে একবারে জন্যও ঠিক করা হয়নি। রিকশার চালকরা এ সমস্যাগুলোর সুযোগ নিয়েছে আর ভাড়া বাড়িয়েছে।

আজ ভিঅাইপি রোডে ভিআইপিরা চলেন। কিন্তু এদেশে অনেক সাধারণ নাগরিক আছেন তাদের রিকশায় চলতে হয়। তাদের অবস্থা নীতিনিধারকদের ভাবতে হবে। ঢাকার অধিকাংশ সরকারী বেসরকারী হাসপাতালে আজ রিকশায় রোগী নেয়া যায় না। এ্যামবুলেন্স ভাড়া... প্রায় ১০০০ থেকে ১৫০০ আর সিএনজি তো তাদের পুরোনা অভ্যাসে ফিরে গেছে।

রিকশা বন্ধ হওয়ায় অনেক মানুষ তাদের সন্তানদের মোটর সাইকেলে নিয়ে চলাচল করেন। অনেকে বাধ্য হয়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়। রিকশা ঢাকার জন্য একটি বাস্তবতা আর তাই রিকশা যাত্রীদের চলচালের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রী এবং মেয়রগণের নজর দেয়া জরুরি।

সুপারিশ
১) ঢাকার রিকশা চলাচালের রাস্তাগুলো জরুরি ভিত্তিতে ঠিক করা।
২) রিকশার ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করা।
৩) মুল সড়কগুলোর আসে পাশে চলাচলে সংযোগ সড়ক বৃদ্ধি করা।
৪) জোন ভিত্তিক রিকশা চলাচলে পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে।






No comments: