
স্বাস্থ্যসেবা হতে হবে গণমুখি, বাণিজ্যিক নয়
অক্টোবর 21, 2011
By সৈয়দ মাহবুবুল আলম
http://alap.rajnoitik.com
ভাই রোগীটা দেখেন, টঙ্গীতে ট্রাকের লগে ধাক্কা খাইছে । দয়া কইরা একটু চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। আমরা টাকা নিয়ে আইতেছি। এই লেখক মুঠোফোনে এভাবেই আকুতি জানান একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে। গুরুতর আহত এক রোগীর চিকিৎসার জন্যে। ছেলেটার অপরিচ্ছন্ন কাপড় আর দরিদ্র সাথীদের দেখে কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা দিচ্ছিল না। এত আকুতির পরও চিকিৎসা পায়নি মারাত্বকভাবে আহত দরিদ্র ছেলেটি। বেসরকারী হাসপাতাল থেকে ছেলেটিকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পৌছানোর আগেই মারা যায় ছেলেটি। এরপর সারাক্ষণ মনে চিকিৎসা করতে পারলে ছেলেটিকে বাঁচানো যেত হয়তোবা।
‘‘ভাই আমাগো বাচ্ছাডা বাঁচবে না।’’ রাত তখন গভীর। বসে আছি ঢাকার একটা শিশু বিশেষাজ্ঞায়িত হাসপাতালে। এক মা আকুতি জানাচ্ছে চিকিৎসকে তার সন্তানকে নবজাতকদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (এনআইসিইউ)তে রাখতে। হাসপাতালে সিট নাই। চিকিৎসক পরামর্শ দিচ্ছেন শিশুটিকে অন্যকোন হাসপাতালে পাঠিয়ে দিতে। কিন্তু অন্য হাসপাতালে নিতে হলে প্রতিদিন প্রায় বিশ হাজার টাকার মতো খরচ লাগবে। তাই শিশুটির মা হাসপাতালে সিট না থাকলে অন্তত মাটিতে স্থান দিতে পীড়াপীড়ি করছিলেন।
ওপরের ঘটনা দুটির মানে দাড়ায় এই যে অর্থের বিনিময়ে পরিচালিত চিকিৎসা কার্যক্রমকে স্বাস্থ্যসেবা বলা অযৌক্তিক। বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা বলতে সে সকল দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা উচিত যারা মানুষকে তাদের সাধ্য অনুসারে সেবা দিচ্ছে। এতে মুনাফা অর্জনই মূল উদ্দেশ্য নয়। কেবল মুনাফা কামাই করতে নানা প্রক্রিয়ায় মানুষকে জিম্মি করার স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রমকে বাণিজ্যিক স্বাস্থ্য কার্যক্রম বলা উচিত। স্বাস্থ্য বিষয়ে নীতিনির্ধারণ ও আলোচনার ক্ষেত্রে সরকারী স্বাস্থ্যসেবা, বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা এবং বানিজ্যিক স্বাস্থ্য কার্যক্রম এই মৌলিক বিষয়গুলো সুস্পষ্ট করা দরকার। বেসরকারী স্বাস্থ্য সেবা পরিভাষাটির আড়ালে স্বাস্থ্য নিয়ে বানিজ্য করার বিষয়টি গোপন থাকে। সেবার কথা বলে এই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রের কাছ থেকে নানা সুযোগ সুবিধা নেয়। কিন্তু তাদের মূনাফা অর্জনের লক্ষ্য মাত্রায় পিষ্ট হয় দেশের সাধারণ জনগন।
স্বাস্থ্যসেবা এই যে বাণিজ্যিকীকরণ হচ্ছে,এরএকটা প্রধান কারণ হলো মানুষ চিকিৎসা সেবাকেই স্বাস্থ্যসেবা ভাবে। দুটো যে আলাদা বিষয় সেই ফারাকটুকু করে না। চিকিৎসা সেবা বলতে যা বুঝায় তাতে সুস্থ্য থাকার উপায় কিম্বা রোগ প্রতিরোধের মতো বিষয়গুলো জায়গা পায় না। পরিবেশ দূষণ রোধ, খাদ্যভাস, কায়িক পরিশ্রম,সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার এ সকল খাতে বানিজ্য করার সুযোগ খুবই কম। অপরদিকে চিকিৎসা কার্যক্রমের সাথে রয়েছে অবকাঠামো, ঔষধ,পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অপারেশন, চিকিৎসকের ফিসহ হরেকরকম অর্থ উপার্জনের সুযোগ। আর নিয়মিত অর্থ উপার্জনের এ সুযোগের কারণে মানুষকে সুস্থ্য রাখা অপেক্ষা চিকিৎসা ও বানিজ্যিক স্বাস্থ্য কার্যক্রমের প্রতি মনোযোগ, প্রকল্প, নীতি ও পরিকল্পনাই অনেক বেশি।
যেখানে মুনাফা হাসিলের উপকরণ মানুষ
সত্তর দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশে বানিজ্যিক স্বাস্থ্যখাতের বিস্তার শুরু হয়। কিন্তু তখনও এ সংক্রান্ত কোন নীতিমালা তৈরি করে নাই সরকার। সে সময় হাসপাতাল, নার্সিং হোম, ক্লিনিক স্থাপনের জন্য স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণদানের একটি স্কীম চালু করা হয়। এরপর ১৯৮২ সালে একটা অধ্যাদেশ জারী করে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতকে আইনি ন্যায্যতা দেয়। সেই অধ্যাদেশ বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি নির্মাণের ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি ও বিশেষজ্ঞ নিয়োগের শর্ত ঠিক করা হয়। ১৯৮৪ সালে পূর্ববর্তী অধ্যাদেশের সংশোধনীসহ আরেকটি অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। সে সময় গৃহীত তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও পরবর্তীতে ১৯৯১-৯৬ গৃহীত চতুর্থ পঞ্চবাষির্কী পরিকল্পনায় বেসরকারি খাত বিকাশে সরকারি পরিকল্পনা সন্নিবেশিত হয়। ১৯৯৬-২০০১ সালে পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বেসরকারি খাতকে বিকাশের পরিকল্পনা শক্তভাবে গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০০১-০৬ বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করতে সরকারীভাবে বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও অর্থ সুবিধার বিধান হাতে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশের মতো গরিব দেশেও বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতের বিস্তার হয়েছে খুব দ্রতভাবে। ১৯৮০ সালে সরকারী পরিচালনায় হাসপাতাল ছিল ৫১০ টি, বিপরীতে বেসরকারী ছিল ৩৯ টি । ১৯৯৮ সালে সরকারি হাসপাতালের সংখ্যা বেড়ে ৬৪৭ টি হয়।বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা দাড়ায় ৬২৬টি । ২০০৫-০৬ সালের এক জরিপ থেকে জানা যায় মোট চার হাজার ১৫টি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুই হাজার ১৬৮টি একক মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত । বর্তমানে কত পরিমান হাসপাতাল, ক্লিনিক ও প্যাথলজি ল্যাব রয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান কারো কাছে নেই । বেসরকারী চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নে বেসরকারি চিকিৎসা সেবা আইন ২০০০ খসড়া প্রণয়ন করা হয়। আইনটি ২০০৩ ও ২০০৪ সালে আরো অধিকতর উন্নয়ন করে পাসের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও, এখনো পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। তবে এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আবার “বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা আইন-২০১০ (খসড়া) তৈরি করেছে। তবে কবে এই আইন পাশ হয়ে মানুষের স্বার্থ রক্ষা করবে তা সত্যিই দেখার বিষয়।
বাংলাদেশে বেসরকারীখাতে স্বাস্থ্যসেবার চিত্র পাওয়া যায় বিশ্ব ব্যাংকের ২০০৩ সালের একটি প্রতিবেদনে। সেই প্রতিবেদন অনুসারে “স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ বেসরকারি স্বাস্থ্যখাত থেকে সেবা নেয় (নিবন্ধিত নয় এমন সেবা প্রদানকারীসহ)। অর্থ ব্যয়ের নিরিখেও বেসরকারি খাতের কলেবর সরকারি খাতের দ্বিগুণের বেশি। স্বাস্থ্য বিষয়ক মুখপত্র হেলথ বুলেটিন ২০১০ এর উপাত্তের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায় ১৯৯৬-৯৭ সালে সরকারি খাতে মোট খরচের পরিমান ছিলো সর্বমোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৩৬%। বেসরকারি খাতে ৬৪%, ১৯৯৭-৯৮ সালে ৩৪% ও ৬৬ %, ১৯৯৮-৯৯ সালে ৩১% ও ৬৯%, ২০০১-০২ সালে ৩০% ও ৭০%, ২০০২-০৩ সালে ২৮% ও ৭২%, ২০০৪-০৫ ও ২০০৫-০৬ সালে ২৬% ও ৭৪%। বেসরকারি খাতের খরচবলতে ব্যাক্তিগত খাতের ব্যয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যয়, এনজিও ব্যয় ও উন্নয়ন সহযোগীদের ব্যয়কে বোঝানো হয়।
বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতের কাছে মানুষ কতটা জিম্মি তা বুঝতে উপরের পরিসংখ্যানটাই যথেষ্ট। তবে বিশ্বব্যাংকের এ সকল তথ্য যথেষ্ট সতর্কতার সাথে গ্রহণ করা উচিত। বিশ্বব্যাংকের এ সকল তথ্যের পরবর্তী পদক্ষেপ থাকে ব্যবসার পথ তৈরি করা। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সরকারে জনস্বার্থে গৃহীত কার্যক্রমগুলোকে অযোগ্য এবং অকার্যকর প্রমাণিত করার প্রকল্পগুলো বানিজ্যিক কার্যক্রমের পথ সুগম করে দেয়। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্য সেবাকে সংকুচিত করার প্রেক্ষিতে মানুষ কোন উপায় না পেয়ে সহায় সম্বল বিক্রি করে ছুটছে বাণিজ্যিক স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম থেকে সেবা পেতে। বাণিজ্য তার নিয়মেই মুনাফা কামাচ্ছে। মানুষ সেখানে কেবলই মুনাফা হাসিলের একটা উপকরণ মাত্র।
বাড়ছে বাণিজ্য, ছড়াচ্ছে রোগ
আগের তুলনায় মানুষের রোগশোক অনেক বেড়েছে। সে অনুপাতে বেশিরভাগ লোক চিকিৎসা পাচ্ছে না। দেশে নীরব ঘাতক ব্যধি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর ৭৫ শতাংশ চিকিৎসা সেবার আওতার বাইরে। ডায়াবেটিস রোগীদের জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম বেড়েছে দ্বিগুন-তিনগুন। এখনো নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রতি ঘন্টায় সাত শিশু মারা যায়। এভাবে বিনা চিকিৎসায় প্রতি বছর মারা যায় ৫০ হাজার শিশু। অপুষ্টিসংক্রান্ত রোগে মরছে নয়শতের মতো শিশু। বাংলাদেশে প্রায় চল্লিশ ভাগ এলাকায় স্যানিটেশন সুবিধা নেই। পানিবাহিত রোগে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে তিনশত ৪২ শিশু। দেশে প্রায় আট লাখ ক্যান্সার রোগীর সাত লাখ রোগী চিকিৎসা পায় না।
বাংলাদেশ অসংক্রামক রোগ দিন দিন বাড়ছে। কর্মব্যস্ত জীবনে পরিকল্পিত খাদ্যাভাস গড়ে তোলার বদলে আমরা অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, কার্বহাইড্রেট, ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুডের অভ্যাস গড়ছি। আমরা আক্রান্ত হই ডায়াবেটিস ও অতিরিক্ত মোটাজনিত রোগে। গ্রামীণ মানুষের ভেতরে বিশের বেশি বয়সী সাত ভাগ লোকই ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। শহরে এর পরিমাণ দাড়িয়েছে শতকরা সতের ভাগ। বাংলাদেশের মোট মৃত্যুর শতকরা ছয় দশমিক দুই ভাগ ঘটে ডায়াবেটিসের কারণে। এছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জনগণ পরিকল্পিত খাদ্যাভাস সম্পর্কে অজ্ঞ ও কম সচেতন। অর্থনৈতিক অভাব অনটনে ভুগছে পুষ্টি জনিত রোগে।
কায়িক শ্রম না করায় জনসংখ্যার একটা বড় অংশ হৃদরোগে আক্রান্ত। আছে উচ্চরক্তচাপ জনিত সমস্যা। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের আঠারোর্দ্ধ বয়সীদের শতকরা ১৩% (পুরুষ ৯.৮% ও মহিলা ১৫.৬%) উচ্চ রক্তচাপে জনিত সমস্যায় ভুগছে। এছাড়া মোট মৃত্যুর শতকরা ২.৪ ভাগ হার্ট অ্যটাক, ৩.৬ ভাগ স্ট্রোক এবং ৬.৫ ভাগ অন্যান্য হৃদরোগ অর্থাৎ সর্বমোট ১২.৫ % মৃত্যুর কারণ নানাবিধ হৃদরোগ। বাংলাদেশে বায়ূ দূষনের কারণে বাড়ছে শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী রোগ। দেশের জনগনের প্রতি হাজারে যথাক্রমে পুরুষ ও মহিলাদের ৪৫ ও ২২ জনের হাপাঁনি বহির্ভূত শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী রোগ আছে । ফলে এই রোগের কারণে মৃত্যুর পরিমান মোট মৃত্যুর ৩% ।
অসংক্রামক রোগের বিষয়ে আমাদের এখনই সচেতন হাওয়া দরকার। চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধেই জোর দিতে হবে। অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধযোগ্য নয় এমনটাই ধরে নেয়া হত এতদিন। কিন্তু শতকরা আশি ভাগ অপরিণত হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ও ৪০ ভাগ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায় যে, কমিউনিটি ভিত্তিক পদক্ষেপ দ্বারা অসংক্রামক রোগসমূহ প্রতিরোধযোগ্য এবং এই সকল রোগ চিকিৎসা করার চেয়ে প্রতিরোধ করা অর্থনৈতিকভাবে অনেক বেশী সাশ্রয়ী।
গবেষকরা বলছেন যে মানুব জাতি গেলো পঁচিশ বছরে নতুন করে পয়ত্রিশটি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, জনসংখ্যার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছড়িছে পড়ছে এ সংক্রামক রোগ। রোগ তত্ত্ববিদেরা বলছেন, পৃথিবীর মানুষ নতুন নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বৃটেনের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মার্ক উলহাউস গেলো পঁচিশ বছরের রোগ বিষয়ক নানা তথ্য বিশ্লেষণ করে দাবি করছেন, এ সময়ে পৃথিবীর মানুষ নতুন আটত্রিশটা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। মানুষের ভেতরে এসব রোগ আগে কখনো ছিল না। এসব রোগের ৭৫ শতাংশ এসেছে জীবজন্তু ও পশু-পাখি থেকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সংক্রামক ব্যাধির বিস্তার নিয়ে পর্যালোচনা করেছে। (গ্লোবালাইজেশন অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস: এ রিভিউ অব দ্য লিংকেজ) তাতে দেখা যায়, ১৯৯৫ সাল থেকে ৩০টি নতুন ও পুরোনো রোগ “নতুনভাবে আসছে। দুনিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রমের নেতৃত্বদানকারী এ সংস্থাটি জানায়, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, রৈখিক জলবায়ু পরিবর্তন, বড় বড় বাঁধ নির্মাণ, বন উজাড় হওয়া, বিস্তীর্ণ ভূমি ন্যাড়া হওয়া-এসব কারণে (সিলেকটিভ অ্যাডভান্টেজ) রোগের আবির্ভাব হচ্ছে। সে হিসাবে বাংলাদেশের প্রতি আট মাসে একটি নতুন রোগের ঝুঁকি প্রতিরোধে প্রস্তুতি যতটুকু আছে তা যথেষ্ট নয়।
রোগ নিয়ন্ত্রণে মনোযোগী না হয়ে মনোযোগ হচ্ছে স্বাস্থ্য বানিজ্যিক খাতে বিস্তারে। কারণ এই খাতটি অন্যতম একটি লাভজনক ব্যবসা। দরিদ্র মানুষ ব্যক্তি মালিকানাধীন স্বাস্থ্য সেবার জন্য এত টাকা খরচে অপারগ। তবুও বাণিজ্যিক স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটছে মফস্বল ও গ্রামের দিকে। সমস্যা হচ্ছে ব্যক্তি মালিকানাধীন এই স্বাস্থ্য কার্যক্রম থেকে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যসেবা, গৃহভিত্তিক সেবা, জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী রোগ এবং অন্যান্য গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার সেবা পাওয়া যাবে না।
No comments:
Post a Comment