Monday, October 13, 2008

পরিবেশ সংরক্ষণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ


পরিবেশ সংরক্ষণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিরাষ্ট্রীকরণে সরকারের এখতিয়ার
১৩ অক্টোবর ২০০৮, জাতীয় প্রেসক্লাব
জাতীয় সম্পদ সুরক্ষা মোর্চা, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)- অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত

বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রত্যেক মানুষের স্বপ্ন। আমরা সকলেই চাই এ দেশ এগিয়ে যাবে সুখ ও সমৃদ্ধির দিকে। সরকার এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের অন্যতম কান্ডারী। তাই সকলের প্রয়োজন, সরকারের এ কার্যক্রমকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সহযোগিতা করা। পরিবেশ, রাষ্ট্রীয় সম্পদ তথা রাষ্ট্র যন্ত্রের যথাপোযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। পরিবেশ ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির রক্ষা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা না গেলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘিœত হবে, তাই এ সম্পত্তি রক্ষায় সরকারের হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমাদের এই প্রচেষ্টা।

রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি বিরাষ্ট্রীকরণে প্রথমেই অর্থনৈতিক উন্নয়নের দোহাই দেওয়া হয়। এই অর্থনৈতিক উন্নয়নের সোনার হরিণের লোভে আমাদের অনেক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিরাষ্ট্রীকরণ এবং পরিবেশ ধ্বংস করে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা হলেও দরিদ্রতা কতটুকু হ্রাস পেয়েছে বা দেশের মানুষের সত্যিকার উন্নয়ন কতটুকু হয়েছে তা বিবেচ্য বিষয়। যদি বৈদেশিক বিনিয়োগ অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক ধরা হয়, তবে এখন প্রশ্ন করার সময়, বিগত দিনের বিনিয়োগের প্রেক্ষিতে কতজন মানুষের স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষার মতো মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর সামর্থ রাষ্ট্রের হয়েছে। নতুন নতুন রাস্তা, দালান বা বাহারী বিজ্ঞাপন অবশ্যই রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের মাপকাটি নয়। দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষদের মৌলিক চাহিদা পূরণে রাষ্ট্র কতটুকু সেবা বা সহযোগিতা প্রদান বৃদ্ধি করতে পেরেছে এটিই রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের মাপকাটি হওয়া প্রয়োজন।

পরিবেশ সংরক্ষণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ
পরিবেশ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ পারস্পরিকভাবে সম্পর্কযুক্ত। রাষ্ট্রীয় সম্পদের হস্তান্তরের ফলে ইতিমধ্যে আমাদের পরিবেশ যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদেশী কোম্পানি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় সম্পদ তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের নামে লাউয়াছড়া এবং মাগুরছড়ার পরিবেশ বিপর্যয় আমাদের সকলের জানা। পরিবেশ ও সম্পদ ধ্বংস করা স্বত্বেও এই কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোন আইনী প্রতিকার গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃক পানি ও বায়ু দূষণ চরম পর্যায়ে পৌঁছাছে। ইপিজেটগুলোর আশপাশের পরিবেশ দূষণ আরো ভয়ংকর অবস্থায় রয়েছে। এখানে বজ্য ব্যবস্থাপনার জন্যও নেই কোন সুষ্ঠ ও পরিকল্পিত ব্যবস্থা।  জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে পরিবেশ রক্ষা করা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব হলেও, এ সকল খাতের উপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সরকার কোন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারছে না। ফয়ে’স লেক এলাকাটি কনকর্ড নামক একটি কোম্পানির হতে তুলে দেওয়া হয়েছে, এই কোম্পানি তাদের নিজ ব্যবসায়িক স্বার্থে ফয়ে’স লেকের বিভিন্ন পরিবর্তন সাধন করেছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্বক হুমকি স্বরূপ। সম্প্রতি শেভরন কোম্পানি ও গ্রামীণ ফোনের বিরুদ্ধে লাউয়াছড়ায় পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যকলাপের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠা স্বত্বেও তাদের বিরুদ্ধে সরকারীভাবে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিরাষ্ট্রীয়করণের ফলে শুধুমাত্র পরিবেশ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং সর্বোপরি দেশের মানুষ। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বিভিন্ন কোম্পানির অনিয়ন্ত্রিত এবং অনৈতিক ব্যবসায় সর্বশান্ত হচ্ছে মানুষ। সরকারী মনিটরিং সংস্থাগুলোকে সুকৌশলে দূর্বল করার মাধ্যমে চিকিৎসা, ঔষধ এবং খাদ্যের মতো অত্যাবশকীয় জিনিসগুলোকে জিম্মি করে জনসাধারণকে প্রতারিত করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিগত কয়েক বছরে বিভিন্ন সেবাখাতগুলোর উপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করার ফলে বিদেশী কোম্পানিগুলো যোগাযোগ, শিল্প ও বাণিজ্য খাত হতে হাজার হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে এবং সেই সাথে ধ্বংস করছে পরিবেশ ও সংস্কৃতি। কোম্পানিগুলোর অনৈতিক ও অনিয়ন্ত্রিত কার্যক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয়। সংস্কার কার্যক্রমের নামে দেশের পরিবেশবান্ধব শিল্প পাটখাতকে ধ্বংস করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়নের নামে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিরাষ্ট্রীকরণ করা  হলেও এ সকল প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের মতো মৌলিক বিষয়গুলোর উপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ হ্রাস পাওয়ায় অনৈতিক ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর নিকট জিম্মি দেশের কোটি কোটি জনগণ।  বিগত দিনের অভিজ্ঞতা হতে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূল কান্ডারী সরকার কোন ধরনের শিক্ষা গ্রহণ না করে বর্তমানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিরাষ্ট্রীয়করণের লক্ষ্যে কোম্পানি করার প্রতিযোগিতা গ্রহণ করেছে। বিগত ২ বছরের রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেবাখাতকে কোম্পানিতে রূপান্তর করেছে।  আর সাথে সাথেই বিদেশী কোম্পানিগুলো এখাত দখলের প্রচেষ্টায় মত্ত রয়েছে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে এখন প্রশ্ন করার বিষয়, কি ভিত্তি, কোন শক্তি এবং কিসের কারণে এই রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হস্তান্তর করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ এবং জনগণের পক্ষেই সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হবে। এছাড়া এ রাষ্ট্রের সকল সম্পত্তির মালিকও জনগণ। জনগণের এই সম্পত্তি জনগণের সম্মতি ছাড়া বিক্রয় কি সংবিধান সম্মত? কেননা যারা ক্ষমতায় এসে জনসাধারণের সম্মত্তি বিরাষ্ট্রীকরণ করেন তারা কি তাদের নির্বাচনী মেনুফেস্টোতে জনগণকে জানায় যে, তারা ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রের সম্পত্তি বিরাষ্ট্রীকরণ করবে। অপরদিকে অনির্বাচিত সরকারের এ সম্পত্তি হস্তান্তরের কোন ক্ষমতা নেই, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

জনগণের নির্বাচিত ব্যক্তিগণ একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে এবং লক্ষ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠদল নিয়ে সরকার গঠন করে। সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ব্যবস্থাপক মাত্র এবং সংসদ হচ্ছে ট্রাস্টি। জনসাধারণকে অবহিত করা ছাড়া জাতীয় সংসদ ও সরকাররের তার সম্পত্তি বিররাষ্ট্রীয়করণ এবং বিক্রয়ের অধিকার কতটুকু তা আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। এ বিষয়ে সুরাহা করা না হলে প্রতিনিয়ত জনগণের অধিকার ও সংবিধান লঙ্ঘিত হবে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিরাষ্ট্রীয়করণ করণের বিপক্ষে মানুষের সংখ্যা অনেক হলেও গুটিকয়েক ব্যক্তি কোন অধিকার বা আইনে বা কার প্ররোচনায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তা রহস্যময়। যদি রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ও সম্পদের মালিক জনগণ হয়, তবে তাদের সম্পত্তি বিক্রির ক্ষমতা ট্রাস্টি বা ব্যবস্থাপকের কোনভাবেই নেই।

রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিরাষ্ট্রীয়করণে লক্ষ্যে সরকারের উপর যেভাবে প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে:
শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকার ও নীতিনির্ধারকদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দূনীতি একটি কার্যকর অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। ঋণপ্রদানকারী সংস্থাগুলো প্রকল্প নামধারী দূনীতি সহায়ক কার্যক্রমের মাধ্যমে দুনীতিকে প্রথমে উৎসাহীত করে। পরবর্তীতে এই দূনীতি হ্রাসের অজুহাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নীতি বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করে। বাংলাদেশের জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, অর্থনীতি, আইন, খাদ্যসহ ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঋণপ্রদানকারী গোষ্ঠী বিশ্বব্যাংক, আই এম এফ, এডিবির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর নগ্ন হস্তক্ষেপ রয়েছে। এ সকল ক্ষেত্রে তাদের পরামর্শ সংস্কার বা উন্নয়ন কার্যক্রমের নামে রাষ্ট্রীয়খাতগুলো ধ্বংস করে সৃষ্টি হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত বেসরকারী বিদেশী ব্যবসায়ীর ক্ষেত্র। এ প্রক্রিয়ায় ধ্বংশ করা হচ্ছে দেশীয় বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকেও।

দূর্নীতি ও অবস্থাপনা এক শব্দ নয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন  অব্যবস্থাপনাকে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাপক দূর্নীতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দূনীতির মূল ক্ষেত্র উচ্চ পর্যায়ে হলেও, অনেক ক্ষেত্রেই নিম্ন পর্যায়ের অব্যবস্থাপনাকে দূর্নীতির সাথে তুলে ধরা হয়। স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির একটি বড় ক্ষেত্র হচ্ছে উপকরণ ক্রয় ও অবকাঠামো নির্মাণ। অথচ এ ক্ষেত্রে দুনীতি নিয়ন্ত্রণের কোন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ না করে রাষ্ট্রীয় সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনাকে দূর্নীতি হিসেবে অবহিত করে স্ব-শাসনের নামে বেসরকারী করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

দূনীতির দোহাই তুলে রাজনীতিবিদের কোনঠাসা এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোম্পানিতে রূপান্তরের পরিকল্পনার মূল হোতা এই সংস্থাগুলো নিজে দূনীতিমুক্ত কি না, তা অনেকেরই প্রশ্ন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দূনীতি নিয়ে এই সংস্থাগুলো নিয়মিত তথ্য পরিবেশন করে। অনেকেই অভিযোগ করেন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্র তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে এই সংস্থাগুলো। বিগত দিনে মোবাইল কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত বিল, ভিওআইপির মাধ্যমে দুনীতি, নাইকো, অক্সিডেন্টাল, এশিয়া এনার্জির মতো কোম্পানিগুলোর অনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিধ্বংসী কার্যকলাপে এই ঋণপ্রদানকারী সংস্থা ও তাদের সহযোগী দূনীতি বিরোধী সংগঠনগুলো নিরব ভূমিকা পালন করেছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সরকারী কর্মকর্র্তাদের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানগুলো সরব ভূমিকা পালন করলেও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বিদেশী কোম্পানির অনৈতিক কার্যক্রমে নিরবতার মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন যুগিয়ে আসছে।

বিগত দিনে এ সকল সংস্থাগুলোর প্রত্যক্ষ পরামর্শে পাটখাত, বিদুৎ, যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, অর্থনীতি এবং শিল্পখাতে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে এই সকল খাতে বিদেশী কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সৃষ্টি হয়েছে এবং দেশের মানুষকে জিম্নি করা হয়। অনেক বিশেষ্ণর মতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতিনির্ধারনে অংশগ্রহনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস এবং বিদেশী কোম্পানিগুলোর ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি করা এই সংস্থাগুলোর অন্যতম কার্যক্রম। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুকৌশলে অকার্যকর প্রমানের অনৈতিক কার্যক্রম করে থাকে এ সংস্থাগুলো।

বেসরকারী খাতে র্দুনীতি নিয়ে র্দুনীতি বিরোধী সংগঠনগুলো নিরবতা:
রাষ্ট্রীয়খাতে ব্যক্তি পর্যায়ের দুর্নীতির কারণে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিরাষ্ট্রীকরণ করার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। অথচ বেসরকারীখাতে দূনীতির বিষয়ে ঋণপ্রদানকারী সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগি এবং দূনীতি বিরোধী সংস্থাগুলো নিরব ভূমিকা পালন করছে। সম্প্রতি অবৈধ ভিওআইপি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদেশী মোবাইল কোম্পানিগুলোকে জরিমানা করা হয়। অথচ বিগত কয়েক বছর ধরে কোম্পানিগুলো নগ্নভাবে এ ধরনের অপতৎপরতার মাধ্যমে দেশের রাজস্ব ক্ষতি করলেও তাদের বিরুদ্ধে এ সকল প্রতিষ্ঠান কোন উচ্চবাচ্য করেনি বরং অনেকে এই সময় গবেষণা করে বের করেছে রাষ্ট্রীয় সেবা প্রতিষ্ঠান বিটিটিবিতে কোন ব্যক্তি কি পরিমাণ দূনীতি করেছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যক্তি পর্যায়ে দূনীতি করা হলেও বেসরকারীখাতে দূনীতি করা হয় কোম্পানির মাধ্যমে। কোম্পানির এ ধরনের কার্যক্রম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ। বেসরকারী কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপনে/উপঢৌকনে মগ্ন থাকার কারণে অনেক দূনীতি বিরোধী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নীরব ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু একতরফা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রচারণা রাষ্ট্রীয় সেবা খাতকে দূর্বল করছে এবং  বিদেশী কোম্পানী/প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবৈধভাবে জনগণকে শোষণ করতে সহযোগিতা প্রদান করছে।

নীতিনির্ধারণ কার্যক্রমে বিশ্বব্যাংক, এডিবি এবং আইএমএফ-এর অনৈতিক হস্তক্ষেপ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দূর্বল করছে
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশ্বব্যাংক, এডিবি এবং আইএমএফ এর মতো ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলোর হস্তক্ষেপ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক সরকারী কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির বিরোধীতা করেছে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের এ ধরনের বিরোধীতা বা হস্তক্ষেপ একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার কোনভাবেই উচিত নয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এ ধরনের সংস্থাগুলোর কার্যক্রম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হলেও বাংলাদেশে কতিপয় আমলা, অর্থনীতিবিদ এবং সংগঠনের সহায়তায় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান সরকারে সময় এই ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলোর খবরদারি এবং হস্তক্ষেপ আরো প্রসারিত এবং নগ্নরূপ ধারণ করেছে।

দেশের জাতীয় সংসদ হতে সরকারের প্রায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পের নামে দূনীতি ও অর্থ অপচয়মূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে সরকারের নীতি ও কার্যক্রমকে প্রভাবিত করছে এ সংস্থাগুলো। প্রকল্প নিয়োজিত সরকারী কর্মকর্তারা বেতন ও অন্যান্য সুবিধা পাবার লক্ষ্যে এই ঋণপ্রদানকারী সংস্থাগুলোর পরামর্শ অনুসারে সরকারী নীতিপ্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য অভ্যন্তরীনভাবে কাজ করে। অপরদিকে প্রকল্পের বাইরের কর্মকর্তারা প্রকল্পের কাজ পাবার আশায় এ সকল সংস্থাগুলোর নীতি বর্হির্ভূত, অনৈতিক কার্যক্রমের কোন ধরনের প্রতিবাদ করে না।

বিদেশী ব্যক্তি বা রাষ্ট্রদূত বা প্রতিনিধিদের জন্য ভিয়েনা কনভেনশন অনুসরণ হলেও এই সংস্থাগুলো কোন ধরনের নীতি ও আইনের তোয়াক্কা করছে না। বিদেশী নাগরিক বা সংস্থা সুবিধা ভোগ করেও লঙ্গন করছে আইন। অর্থনীতিক পরামর্শের দোহাই দিয়ে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, পরিবেশ, সংস্কৃতি সর্বক্ষেত্রেই তারা হস্তক্ষেপ করছে। এই সংস্থাগুলোর হস্তক্ষেপ দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে। যদি এ সংস্থাগুলোর পরামর্শে দেশ পরিচালিত হবে তবে জাতীয় সংসদের ভূমিকা ও কার্যকারিতার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।  দেশের সংরক্ষিত বিভাগে এ সকল বিদেশী সংস্থার নীতি প্রণয়ন বা প্রভাবক প্রকল্প বন্ধ করা উচিত। সেই সাথে নীতিগ্রহণ সংক্রান্ত কোন কার্যক্রমে তাদের অংশগ্রহণ নিরুৎসাহিত ও সংরক্ষিত করা প্রয়োজন।

বিরাষ্ট্রীকরণ রাষ্ট্রীয় সেবা কার্যক্রম প্রশাসনকে দূর্বল করছে:
বাংলাদেশ রেলওয়েসহ বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারীকরণ করার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখানো হয় প্রশাসনিক দূর্বলতা, দূর্নীতি, অদক্ষতা। অথচ এ প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না। বর্তমানে ঋণপ্রদানকারী সংস্থা এবং বিভিন্ন বেসরকারী সংগঠনগুলো সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দূর্নীতি নিয়ে অনেক সরব। কিন্তু বেসরকারী কোম্পানিগুলোর অন্যায় বাণিজ্য বা দূর্নীতি নিয়ে ঋণপ্রদানকারী সংস্থা বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নীরব। প্রথমদিকে মোবাইল কোম্পানিগুলো মোবাইল সীম ও সেট এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছে, বর্তমানে সেট সীম ১১০০ টাকায় বিক্রি করেছে, সীম মাত্র ৫০ টাকা। কিন্তু অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, সরকার মোবাইল বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় বেসরকারী কোম্পানিগুলো তাদের দাম হ্রাস করেছে। কিন্তু তারপূর্বে কোম্পানিগুলোকে দাম কমাবার কথা বলা হলেও তারা কোন উদ্যোগ নেয়নি। সরকারকে শক্তিশালী করতে সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। বর্তমানে বেসরকারী কোম্পানিগুলোর দূনীতি ও স্বেচ্ছাচারীতা এবং বাজারের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ বেসরকারীকরণ দূর্নীতি হ্রাস ও উন্নয়নের মাধ্যম নয়, বরং এই ব্যবস্থা রাষ্ট্রকে কিছু ব্যক্তি বা কোম্পানির মুখাপেক্ষী করে তোলে। এ ক্ষেত্রে রেলের মতো একটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিরাষ্ট্রীকরণ করা হলে জাতীয় নিরাপত্তাসহ অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে এবং জনগণ যানবাহন চক্রের কাছে জিম্মি হবে। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিআরটিসি এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে ভঙ্গুর করা হয়েছে। যা দেশের মানুষকে একটি চক্রের নিকট আবদ্ধ করেছে।

চিকিৎসা সেবাকে উদ্দেশ্য করে বেসরকারী হাসপাতাল করা হলেও বেসরকারী চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো পরিণত হয়েছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে। হাসপাতালের সিটা ভাড়া, রুম ভাড়া, চিকিৎসা খরচ, ঔষধ খরচ, টেস্ট যে কোন খরচে কর্তৃপক্ষ তাদের লগ্নিকারী অর্থ লাভের চেষ্টায় লিপ্ত থাকেন। তাদের অর্থ লাভের চেষ্টায় পিষ্ট হয় সাধারণ মানুষ। চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক সাধারণ মানুষ ও পরিবার সর্বশান্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবার অপ্রতুলতার জন্য সারাদেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক, প্যাথলজি ও ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সেবাব নামে চালাচ্ছে রমরমা বাণিজ্য। নিম্নমানের ঔষধ আর লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবন ঔষ্ঠগত। একটি কল্যাণকর রাষ্ট্রে মানুষের উপর এ ধরনের পরিকল্পিত নির্যাতন পরিচালনার অনুমোদন দিতে পারে না নির্বাচিত, অনির্বাচিত কোন সরকারই।

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে দেশের রাষ্ট্রয়াত ব্যাংক বিরাষ্ট্রীকরন করার প্রক্রিয়ায় কোম্পানি করা হয়েছে। এর পূর্বে বাংলাদেশ বিমানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয়। কোম্পানিতে রূপান্তরের পর এ সকল প্রতিষ্ঠান হতে হাজার হাজার লোক ছাটাই করা হয়। শুধু বর্তমান সরকার নয়, প্রতিটি সরকার বিশ্বব্যাংকের বা ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলোর পরামর্শে এ ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, যে সকল লোককে ছাটাই করা হচ্ছে তাদের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা কে দেবে? তাদের জীবন ধারন কিভাবে হবে? বিশ্বব্যাংক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় তা তাদের বিবেচ্য বিষয় নাও হতে পারে। তবে সরকার কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নয়। জনগণের সাথে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের দায়িত্ব জনগণকে সেবা প্রদান এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সেবা প্রদান। কিন্তু বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি, আইএমএফ এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের সাথে জনগণের সম্পর্ক একটি ব্যবসায়িক অবস্থায় নিয়ে যেতে চাচ্ছে। সরকারকে জনগণ অপেক্ষা ব্যবসায়িক গোষ্টীর স্বার্থ দেখতে চাপ প্রয়োগ করছে। এখনো অধিকাংশ ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকগণ এ সকল ঋণপ্রদানকারী সংস্থার পরামর্শ অনুসারে নীতিগ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বিদেশী কোম্পানিগুলোর মুনাফা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেলে আমাদের উপর চেপেছে ঋণের বোঝা এবং বৃদ্ধি পেয়েছে দরিদ্রতা। সরকার এদের চাপে কোটি কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ নিলেও তার সুফল নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দেশের মাথাপিছু গড় আয় ৫০০ মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেলেও গত ৩৮ বছরে দারিদ্র্য কমেনি। দরিদ্র লোকের সংখ্যা সাড়ে ৫ কোটি থেকে বেড়ে সাড়ে ৯ কোটি ছড়িয়ে গেছে। প্রতিবছর বাড়ছে ঋণের বোঝা। বর্তমানে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১১ হাজার টাকার বেশি। প্রতিবছর ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। যা দিয়ে দেশের ১ কোটির বেশি লোকের কর্মসংস্থান সম্ভব ছিল।

বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার কথা আমাদের সকলের জানা। বিশ্বের অন্যতম সম্পদশালী দেশ হওয়ার পরও আমেরিকা, ইংল্যান্ড এর মতো দেশগুলো অর্থনৈতিক মন্দার প্রকোপ হতে রক্ষা পাচ্ছে না। এ সকল রাষ্ট্র ব্যাংক, রেলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রায়ত করেছে। সম্প্রতি আইসল্যান্ড তাদের সর্ববৃহৎ ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত করেছে। এ সকল দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার প্রেক্ষিতে সরকার রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে অর্থ প্রদাণ করে এর সকল প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রায়ত করেছে। আর ঠিক একই সময়ে বাংলাদেশে একের পর এক রাষ্টীয় প্রতিষ্ঠান কোম্পানি করার নামান্তরে বিরাষ্ট্রীকরণ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মন্দার অন্যতম কারণ হিসেবে বুশ প্রশাসনের বিরাষ্ট্রীয়করণ নীতিকে দায়ী করা হয়। বুশ প্রশাসনের ঢালাও বিরাষ্ট্রীয়করণ নীতি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করে। ফলে বর্তমান এই সংকট। বিরাষ্ট্রীয়করনের ফলে দেশের যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থ, পরিবেশ সকল ক্ষেত্রই আজ জিম্মি অনৈতিক ব্যবসায়ীদের হাতে। খাদ্যে অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি, নিয়ন্ত্রণহীন যাতায়াত ভাড়া, চিকিৎসা খরচ বৃদ্ধি, ঔষধদের অনিয়ন্ত্রিত মূল্য, বীজ সংকট, মোবাইল কোম্পানিগুলোর অস্বাভাবিক রেট, ব্যাংকগুলোর অযৌক্তিক চার্জ, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানহীন শিক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণহীনতার ফসল। প্রশ্ন হচ্ছে, এই অবস্থা হতে আমরা কি উত্তরন চাই? নাকি জনগনকে কোম্পানির দাসে পরিণত করতে চাই।

আজ এই মুহুর্তে তাই প্রশ্ন করার সময়, রাষ্ট্রের সম্পদ বিরাষ্ট্রীকরণ করার ক্ষমতা সরকারের কতটুকু? জনগণের অর্থে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ও সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষমতা এই গুটিকয়েক ব্যক্তিকে কে প্রদান করেছে? সরকার নামক ব্যবস্থাপক কিভাবে জনগণের সম্পদ বিক্রি করে দিতে পারে? বিশ্ববাংক, আইএমএফ, এডিবি ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মতো বিদেশী স্বার্থে কার্যরত প্রতিষ্ঠানগুলোর কতটুকু ক্ষমতা রয়েছে আমাদের সরকার ও  রাষ্ট্রনীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানের? আমাদের সম্পদ, রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়ে বিদেশী ঋণদাতাগোষ্ঠীর কোনরকম চাপ প্রয়োগ কঠোরভাবে দমন করতে হবে। এ সকল প্রতিষ্ঠানের অনিয়ন্ত্রিত ও অনৈতিক প্রভাব আজ দেশকে এই সংকটের দিকে নিয়ে গেছে। প্রশাসন আজ তাদের নিকট জিম্মি। প্রকল্প নামক কর্মকান্ডের অধিক বেতন ও সুবিধা দিয়ে তারা এ দেশের মানুষদেরকে দিয়ে স্বেচ্ছাচারী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। যদি তাদের এ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে মহান জাতীয় সংসদের ক্ষমতা ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।

আমরা বিশ্বাস করি, অতীতের ভুল হতে শিক্ষা নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক ও নীতিনির্ধারকগণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। রাজনীতিবিদই এদেশের নীতিগ্রহণ ও ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করবে। সরকার যাতে জনগণের সেবক হিসেবে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করছে। ঋণপ্রদানকারী সংস্থাগুলো অযৌক্তিক প্রকল্প, সিদ্ধান্ত এবং স্বেচ্ছাচারী কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ করবে। রাষ্ট্র ও প্রশাসনে এ সকল বহিরাগতদের হস্তক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ করবে। বিগত কয়েক বছরের বিরাষ্ট্রীয়করণকৃত সম্পদ রাষ্ট্রীয়করণের উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং বিরাষ্ট্রীয়করণের জন্য পরামর্শ প্রদানকারীদের শাস্তি প্রদান করবে। জাতীয় সংসদ হয়ে উঠবে আমাদের আস্থা ও আশার প্রতীক।